আমরা সবাই জীবনে সফল হতে চাই, ভালোবাসা পেতে চাই, চারপাশের মানুষ যেন আমাদের পছন্দ করে—এই স্বপ্ন দেখি। কিন্তু সেই স্বপ্ন অনেক সময় বাস্তব হয় না। কেন? কারণ আমরা জানি’ই না, কিভাবে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে হয়। কিভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমরা জানি’ই না কিভাবে অন্যের প্রতি ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করা যায়—ভালোর জন্য, মানুষের ভালবাসা পাওয়ার জন্য।
আমার নিজের গল্প দিয়েই শুরু করি।
একসময় আমি ভাবতাম, কাজেই সবকিছু প্রমাণ করতে হবে। পড়ালেখার সময়, আমি ছিলাম ক্লাসে অন্যদের থেকে এক পা এগিয়ে। যা দু’দিন পর পড়ানো হবে, আমি তা আগেই মুখস্থ করে যেতাম। ভেবেছিলাম—এটাই মেধার পরিচয়। এটাই শ্রেষ্ঠত্ব। প্রতিযোগিতা আমাকে টান-তো না—আমি প্রতিযোগিতার আগে দৌড় শুরু করতাম। ভাবতাম—সবাই বুঝবে আমি আলাদা।
সবার আগে কাজ শেষ করতাম, দক্ষতা দেখাতাম, নিজের স্মার্টনেস যেন চোখে পড়ে—এই চেষ্টা করতাম প্রতিনিয়ত। ভেবেছিলাম, সবাই নিশ্চয়ই আমাকে বাহবা দেবে, ভালোবাসবে। কিন্তু! কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। কারণ বাস্তবতা ছিল উল্টো। সহকর্মীদের মুখে হাসি থাকত, কিন্তু চোখে থাকত দুরত্ব। আমি বুঝতেই পারতাম না—আমি কী ভুল করছি? তারা আমাকে দেখতে শুরু করলো অহংকারী হিসেবে। আমার চারপাশটা ঠান্ডা হয়ে যেতে লাগলো। কেউ আর পাশে দাঁড়াতে চাই-তো না।
একদিন লাঞ্চ ব্রেকে একজন সিনিয়র আমাকে বলল, ‘‘তুই তো একদম রোবটের মতো—কাজ করিস, চলে যাস। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে শেখ, তাহলে কাজের মূল্য বাড়বে।’’ তার কথাটা শুনে আমি অবাক হয়ে ওনার চোখের দিকে অনেকটা সময় তাকিয়ে ছিলাম। ভাবতে ছিলাম, আমি তো কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি না, তাহলে কীসের অভাব?
এর দুই দিন পরের কথা।
নীলক্ষেতের ফুটপাত ধরে হাঁটছি। পকেটে খুব বেশি টাকা নেই, শরীর হালকা হালকা ক্লান্ত আর মাথায় নানা ভাবনা। রাস্তার পাশে সারি সারি বইয়ের দোকান। পরিচিত সেই দৃশ্য—চটের ছাউনি, পুরনো বইয়ের গন্ধ, আর দোকানিদের চেনা ডাক: “বই লাগবে ভাই? এই বইটা নেন ভাই! এইটা নতুন এসেছে!” আমি এড়াতে চেয়েছিলাম—কারণ এই ডাক আমার কাছে কোলাহল ছাড়া কিছু নয়। ঠিক এমন সময় পাশ থেকে এক বৃদ্ধ কণ্ঠ ভেসে এলো, “বাবা, কি লাগবে তোমার? একটা বই নিয়ে যাও।”
প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। চির-চেনা ডাক ভেবে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তাঁর পরের কথাটা শুনে পা থেমে গেল, বুক কেমন করে উঠলো… “এই রোদের মধ্যে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। একটা বইও বিক্রি হলো না। কেমনে সংসার চলবো?” কথাগুলো বৃদ্ধ আনমনেই বলছে।
আমি থমকে দাঁড়ালাম। বৃদ্ধের মুখে ক্লান্তির ছাপ, কিন্তু চোখে একরাশ আশা। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেখি, মোটমুটি ২০০ টাকা আছে। রিকশাভাড়ার জন্য ৫০ টাকা রেখে, বাকি দেড়শ টাকা বৃদ্ধের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, “একটা বই দিন আমাকে।”
তিনি একটু অবাক হয়ে মুচকি হাসলেন, তারপর বললেন, “কোনটা নিবা বাবা?” আমি বললাম, “আমি তেমন বই পড়ি না। আপনি যেকোনো একটা প্যাকেটিং করে দিন।”
বইটা এনে টেবিলের একপাশে রেখে দিয়েছিলাম। তারপর দিন গড়িয়েছে, সপ্তাহ পেরিয়েছে, বইয়ের কথা একেবারে ভুলেই গেছি। হঠাৎ একদিন, প্রবল বৃষ্টি নামলো। আকাশ কালো, বাসায় বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল অফ—চার্জ শেষ। সময় যেন আটকে আছে, কিছুই ভালো লাগছিল না।
আনমনে টেবিলের ওপর রাখা সেই প্যাকেট করা বইটার দিকে তাকালাম। উঠিয়ে হাতে নিলাম। খুলে দেখি—“How to Win Friends and Influence People” – ডেল কার্নেগীর লেখা একটি বিখ্যাত বই। আমি অনিহা নিয়ে সময় কাটানোর জন্য বইটি পড়া শুরু করলেও কিছুদূর পড়ার পর আমি বুঝতে পারলোম আমি এতো দিন মানুষের সাথে যেমন আচারণ করেছি তা সম্পূর্ন ভুল। বইটি পড়ে আমি চারটি খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয় পেয়েছি যা পরবর্তিতে আমার জীবন বদলে দিয়েছে, আজ আমি সেই চারটি অভিজ্ঞতা আপনার সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি—যাতে আপনিও জীবনের সম্পর্কগুলো নতুন চোখে দেখতে পারেন।
১. বন্ধুত্বের আসল রহস্যঃ প্রকৃত বন্ধুত্ব কি শুধুই কথার বাঁধন? নাকি এর শিকড় আরও গভীরে—চোখে, মনে, প্রাণের টানে? সত্যি বলতে, দীর্ঘস্থায়ী ও অর্থবহ বন্ধুত্ব তৈরি হয় তখনই, যখন আমরা অন্যকে জানার আগ্রহ দেখাই। ঠিক যেমন মরুভূমির তৃষ্ণার্ত পথিক ছায়ার দিকে ছুটে যায়, তেমনি মানুষও এগিয়ে আসে তাদের দিকে, যারা তাদের চিনতে চায়, বুঝতে চায় – কোনো স্বার্থ ছাড়াই।
একবার ভাবুন তো, আপনি যদি আজ থেকে অন্যের প্রতি আগ্রহ দেখাতে শুরু করেন—তাদের স্বপ্ন, তাদের শখ, তাদের জীবনের ছোট ছোট গল্পগুলো জানতে চান—তাহলে খুব অল্প সময়েই আপনি অসংখ্য বন্ধু পেয়ে যাবেন। কারণটা খুব সহজ: মানুষ চায় কেউ তাদের জানুক, তাদের বুঝুক।
এর বিপরীতে, আপনি যদি কেবল অপেক্ষা করেন যে, অন্যরা আপনার প্রতি আগ্রহী হবে, আপনার গুণগান গাইবে, তাহলে সেই বন্ধুত্বের পথ কখনোই তৈরি হবে না। কারণ, মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাই হলো নিজের কথা বলা, নিজের জগতকে অন্যের কাছে তুলে ধরা।
২. শব্দ নয়, মনোযোগই সম্পর্কের চাবিকাঠিঃ সৃষ্টিকর্তা আমাদের দু’টো কান আর একটা মুখ দিয়েছেন – এর পেছনে নিশ্চয়ই গভীর কোনো উদ্দেশ্য আছে! আজকের এই কোলাহলপূর্ণ, কথার ভিড়ে ঠাসা জীবনে, যেখানে প্রত্যেকেই নিজের কথা বলতে উদগ্রীব, সেখানে একটু থামতে পারা, মন দিয়ে শুনতে পারাটা যেন এক দুর্লভ ক্ষমতা। আর এই ক্ষমতাই আপনাকে করে তুলতে পারে অন্যের কাছে শান্তির পরশের মতো, এক গভীর নির্ভরতার আশ্রয়।
আমরা সবাই চাই আমাদের কথা কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনুক। ঠিক তেমনি, যখন কেউ আপনার সাথে কথা বলছে, তাকে আপনার ‘‘সম্পূর্ণ মনোযোগ’’ উপহার দিন। তার চোখের দিকে তাকান, তার কথাগুলোয় ডুবে যান। তার সাফল্য, তার আনন্দ, এমনকি তার দ্বিধা বা উদ্বেগের কথাতেও আগ্রহ দেখান। যে বিষয়গুলো তিনি উপভোগ করছেন, সেগুলোতে উৎসাহ দিন এবং তাকে আরও বলার সুযোগ করে দিন। মনে রাখবেন, ভালো বক্তা হওয়ার প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো একজন মনোযোগী শ্রোতা হওয়া।
একটা মজার ব্যাপার কি জানেন? আপনি যখন মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, মানুষ আপনাকে একজন অসাধারণ আলাপচারী হিসেবে গণ্য করতে শুরু করবে। যখন কেউ তার জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের কথা বলছে, আপনি যদি তখন তার চোখে চোখ রেখে আন্তরিকভাবে বলেন, ‘‘দারুণ! আপনি বিষয়টা যেভাবে সামলেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য!’’ – বিশ্বাস করুন, সেই মানুষটি আপনাকে হৃদয়ে গেঁথে রাখবে, খুব যত্ন করে।
মানুষ তখনই আপনাকে একজন ভালো শ্রোতা হিসেবে গ্রহণ করে, যখন আপনি তাকে সত্যিকার অর্থেই খুবই মনোযোগ দিয়ে শোনেন। এটা শুধু নীরবে শুনে যাওয়া নয়, বরং এর সাথে আরও কিছু বিষয় জড়িত:
- দৃষ্টি সংযোগ: বক্তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা শুনুন। এটা আপনার মনোযোগের প্রমাণ দেয়।
- শারীরিক ভাষা (Body Language): মাঝে মাঝে সম্মতিসূচক মাথা নাড়ুন। আপনার শারীরিক ভঙ্গি যেন আগ্রহ প্রকাশ করে।
- উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া: ‘হুম,’ ‘তারপর কী হলো?’, ‘এটা তো দারুণ ব্যাপার!’—এমন মতো ছোট ছোট বাক্যে সাড়া দিয়ে তাকে কথা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করুন।
বক্তা তখনই তার মনের ঝাঁপি খুলে দেয়, যখন সে অনুভব করে যে, তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তার কথা মনোযোগ সহকারে শোনা হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে এই সরল গুণটি যদি আপনি রপ্ত করতে পারেন, তাহলে দেখবেন, মানুষের ভিড়েও আপনি স্বতন্ত্র হয়ে উঠবেন। সম্পর্কগুলো হয়ে উঠবে আরও গভীর, আরও অর্থবহ।
৩. তার প্রিয় কথাই হোক সংলাপের ভাষাঃ প্রত্যেক মানুষেরই কিছু ‘প্যাশন’ থাকে—কারো ফুটবল, কারো গাছপালা, কারো সংগীত। একজন ব্যক্তির কাছে প্রিয় এবং আস্থাভাজন হয়ে ওঠার তৃতীয় পদক্ষেপ বা উপায় হলো আপনার কোন বিষয় নিয়ে কথা না বলে তার প্যাশন নিয়ে কথা বলুন। একজন মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার এটাই সব থেকে সঠিক রাস্তা। মানুষ চায় তার প্রিয় বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে। আপনি যদি সত্যিই কারো কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চান, তাহলে আপনার জানা বা পছন্দের গল্পগুলো পেছনে রেখে তাকে তার গল্প বলার সুযোগ দিন। আপনি শুধু শুনবেন, এবং মাঝে মাঝে শুধাবেন, “তারপর কী হলো?”
যখন আপনি অন্যের প্যাশন নিয়ে কথা বলবেন, তখন বেশ কয়েকটি লাভ হবে।
- প্রথমত, তিনি আপনাকে পছন্দ করতে শুরু করবে।
- দ্বিতীয়ত, আপনি তার কাছ থেকে নতুন কিছু শিখতে পারবেন।
- তৃতীয়ত, আপনি তার দৃষ্টিকোণ থেকে জগৎটাকে দেখতে পাবেন। এবং সর্বোপরি, জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি যা শিখেছেন, আপনি তার কাছ থেকে সেই শিক্ষা লাভ করতে পারবেন।
এবং এভাবেই আপনি ধীরে ধীরে হয়ে উঠবেন—তার জীবনের এক নির্ভরযোগ্য অধ্যায়।
৪. অন্যকে গুরুত্ব দেওয়াই শ্রেষ্ঠ কৌশলঃ এই বিষয়টা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেক সময় ভাবি, “নিজেকে বড় করে দেখালে মানুষ সম্মান করবে।” কিন্তু আসলে হয় উল্টোটা। মানুষ তখনই আপনাকে গুরুত্ব দিবে, যখন সে বুঝতে পারবে—আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সম্মান পাওয়ার জন্য সম্মান দিতে হয়। প্রশংসা পাওয়ার জন্য কাউকে আগে ছোট ছোট প্রশংসায় ভরিয়ে দিতে হয়। একজন নেতার শক্তি কোথায় জানেন? তার জ্ঞান বা ধন-সম্পদে নয়, বরং সে কতটা মানুষের হৃদয় ছুঁতে পারে—সেই ক্ষমতায়।
মানুষের স্বভাবের গভীরে রয়েছে অন্যের কাছ থেকে সমাদৃত হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। আমরা সবাই চাই যে অন্যরা আমাদের গুরুত্ব দিক এবং প্রশংসা করুক। সমস্যা হলো, আমরা অনেক সময় নিজেদের কতটা গুরুত্বপূর্ণ, স্মার্ট বা দক্ষ, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। এটা ভুল পন্থা। মানুষ তখনই আপনাকে পছন্দ করবে, যখন সে আপনার প্রতি উৎসাহী হবে। আর মানুষ তখনই আপনাকে গুরুত্ব দিবে অথবা আপনার প্রতি উৎসাহী হবে, যখন সে বুঝতে পারবে—আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সম্মান পাওয়ার জন্য সম্মান দিতে হয়। প্রশংসা পাওয়ার জন্য কাউকে আগে ছোট ছোট প্রশংসায় ভরিয়ে দিতে হয়। একজন নেতার শক্তি কোথায় জানেন? তার জ্ঞান বা ধন-সম্পদে নয়, বরং সে কতটা মানুষের হৃদয় ছুঁতে পারে—সেই ক্ষমতায়।
যখন আপনি কাউকে এটা বোঝাতে এবং বিশ্বাস করাতে পারবেন যে, তিনি আপনার কাছে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তখন তিনিও আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শুরু করবে। ইংল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন ডিজ্রেইলির সেই গল্প মনে আছে?
তিনি যখন ইংল্যান্ডে তার নির্বচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, তখন একজন ভদ্রমহিলা (প্রতিদ্বন্দ্বী দলের) বেঞ্জামিন এর সাথে ডিনার করতে চাইলেন। প্রচারনার স্বর্থে বেঞ্জামিন রাজি হয়ে গেলেন। ডিনার শেষে যখন গনমাধ্যম কর্মিরা ভদ্রমহিলার অনুভূতি জানতে চাইলো, তখন তিনি বললেন: ডিনার শেষে আমি অনুভব করলাম, আমি পৃথিবীর সবথেকে স্মার্ট মানুষটির সাথে রাতের আহার করলাম, তিনি সত্যিই খুবই যোগ্য এবং চমৎকার মানুষ, তিনি নিশ্চিন্তে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তার কিছুদিন পর তিনি আবার বেঞ্জামিন ডিজ্রেইলির সাথে রাতের আহার করলেন। বেঞ্জামিন এর সাথে রাতের আহার শেষে তিনি গনমাধ্যমকে বলেলেন, বেঞ্জামিন এর সাথে আহার করে আমার মনে হয়েছে আমি পৃথিবীর সবথেকে স্মার্ট মানুষ, তাই আমি বেঞ্জামিনকে ভোট দিব।
হ্যাঁ, এখানেই হচ্ছে আসল পয়েন্ট। বেঞ্জামিন তাকে যথেষ্ঠে গুরুত্ব দিয়েছে এবং ভদ্রমহিলাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, তিনি বেঞ্জামিন এর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর ভদ্রমহিলাও যখন বুঝতে পারছেন, তিনি বেঞ্জামিন এর কাছে গুরুত্বপূর্ন, তখন তিনিও বেঞ্জামিনকে গুরুত্ব দেওয়া শরু করেছেন।
একটা জিনিষ মনে রাখবেন, আপনি যখন কাউকে তার নিজের চোখেই মহান হতে সাহায্য করবেন, সে তখন আপনাকেও তার হৃদয়ের আসনে বসাবে। অর্থাৎ যে আপনাকে পছন্দ করবে আপনিও তাকে অবশ্যই পছন্দ করবেন! এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।
শেষ কথাঃ মানুষ আপনাকে তখনই ভালোবাসবে, যখন আপনি তাদের ভালোবাসার উপযুক্ত মনে করবেন। এটাই সম্পর্কের সবচেয়ে প্রাকৃতিক সূত্র—যে ভালোবাসে, সে-ই ভালোবাসার যোগ্য হয়। তাই যদি আপনি বন্ধুত্ব চান, হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সম্পর্ক চান—তাহলে আপনাকে এই চারটি মানবিক অস্ত্র নিজের মধ্যে ধারালো করে তুলতে হবে:
১. অন্যের প্রতি টান তৈরি করুন মন থেকে, দেখানোর জন্য নয়।
২. বলার আগে শোনার মানুষ হন।
৩. তার প্রিয় বিষয় নিয়ে কথা বলুন।
৪. নিজেকে নয়, তাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলুন। অর্থাৎ তাকে বুঝতে দিন—সে আপনার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।
যখন আপনি এই চারটি সূত্র আয়ত্ত করে নিতে পারবেন, তখন শুধু মানুষ নয়—আপনার আশেপাশের পৃথিবীও আপনাকে নিজের করে নেবে।